কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ৭৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩৯ জনেরই কোনো লেখাপড়া নেই। হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতার কলামে প্রার্থীরা নিজেদের সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন, অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন বা স্বশিক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন। সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন কাউন্সিলর প্রার্থীর ছড়াছড়ি দেখে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, করিমগঞ্জ পৌরসভার কার্যক্রম ২০০৩ সালে শুরু হলেও এটি প্রথম নির্বাচন। ৭ দশমিক ৮৫ বর্গকিলোমিটার পৌরসভার লোকসংখ্যা ৪০ হাজার ৪৩২ জন। ভোটার আছেন ১৬ হাজার ৭০৩ জন। প্রথম নির্বাচন হওয়ায় প্রার্থীদের মধ্যে ভোট নিয়ে বাড়তি আগ্রহ ও উত্তেজনা লক্ষ করা যাচ্ছে। কিন্তু প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে অনেকে হতাশ। যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীর অভাব থাকায় তাঁরা কাকে ভোট দেবেন, ভেবে পাচ্ছেন না। নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন নিয়েছেন আটজন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৫ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে যে পাঁচজন কাউন্সিলর নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের সবাই সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। একজন প্রার্থীও বিদ্যালয়ে যাননি। প্রার্থীদের তালিকা দেখে বেশ কিছু ভোটার হতাশা প্রকাশ করে জানান, প্রার্থী ভালো হয়নি। তাই ভোট দিতে যাবেন কি না ভাবছেন।হলফনামা সূত্রে জানা গেছে, মেয়র পদে যে আটজন লড়ছেন, তাঁদের মধ্যে তিনজন সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন ও স্বশিক্ষিত। তাঁরা হলেন দুলাল শিকদার, আবদুল কাইয়ুম ও আবু হাশেম। শাহ তবারক হোসেন অষ্টম শ্রেণী পাস। একমাত্র স্নাতকোত্তর প্রার্থী হলেন আজিজুর রহমান। স্নাতক পাস করেছেন রুস্তম আলী। কামরুল ইসলাম চৌধুরী এইচএসসি ও সিরাজুল হক এসএসসি পাস করেছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কে মেয়র পদপ্রার্থী আবু হাশেম বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। এসএসসি পাস না করা পর্যন্ত নিজেকে শিক্ষিত দাবি করা ঠিক নয়।’

সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর প্রার্থী ১৩ জনের মধ্যে দুজন এইচএসসি পাস। তাঁরা হলেন ফারজানা আক্তার ও জহুরা আক্তার। সাতজন আছেন সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন চারজন।সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৫৫ জনের মধ্যে ৩১ জনই লেখাপড়া না জানা প্রার্থী। তাঁদের শুধুই সাক্ষরজ্ঞানটুকু আছে। দুজন প্রার্থী আছেন, যাঁরা এইচএসসি পাস করেছেন। এই দুজন হলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মিজানুর রহমান ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উসমান গণি। এসএসসি পাস করা কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন সাতজন। পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করা প্রার্থীর সংখ্যা ১৫ জন।

করিমগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে এত প্রার্থী দাঁড়ানোর কারণ কী, এমন প্রশ্নের জবাবে পৌর এলাকার বাসিন্দা আবদুল আজিজ বলেন, মেয়র ও কাউন্সিলর পদটিকে অনেকে লাভজনক পদ বা পেশা মনে করেন। মেয়র বা কাউন্সিলর হতে পারলে আর্থিক ও সামাজিক লাভের ব্যাপার আছে। তাই অর্থ ব্যয় করতে দ্বিধা করেন না তাঁরা। 

-প্রথম আলো