মানুষ আর মানুষ। তিল ধারণেরও জায়গা ছিল না। একটু পরপরই করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠছিল পুরো এলাকা। প্রথম বাংলাদেশি এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহীমকে সংবর্ধনা জানাতে গতকাল বৃহস্পতিবার এমনই দৃশ্য দেখা গেল রবীন্দ্র সরোবরজুড়ে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল মুসা ইব্রাহীম সংবর্ধনা পরিষদ। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মুসাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার দেওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুসার মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের অনেকেই। এ ছাড়া শিক্ষক, শিল্পী, সম্পাদক, খেলোয়াড়সহ নানা পেশার মানুষ এসেছিলেন।
মুসার বাবা আনছার আলী বলেন, ‘ছেলে ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতিপ্রেমিক। যেকোনো কাজেই সে ছিল মনোযোগী ও একাগ্র। কিন্তু আমরা কখনো ভাবিনি সে পাহাড়ে উঠবে। সে পাহাড়ে উঠতে পেরেছে তার একাগ্রতার জন্যই।’
মুসার স্ত্রী উম্মে শরাবন তহুরা বলেন, ‘মুসার লক্ষ্যই ছিল হিমালয়ের চূড়ায় ওঠা। সে তা পেরেছে। এটা খুবই আনন্দের।’
কথার ফাঁকে ফাঁকে চলছিল গান। গান গেয়ে শোনান শুভ্র দেব, মেহরিন, আইয়ুব বাচ্চু, আসিফ আকবর, মাহমুদুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশের এত কাছে হিমালয়, অথচ এত দিন কেউ এর চূড়ায় উঠতে পারেনি। মুসা পেরেছে। আমাদের সামনে আদর্শ খুব কম। মুসাকে সামনে রেখে আমরা তার মতোই পরিশ্রমী নতুন প্রজন্ম তৈরি করব।’ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি মুসা। হিমালয়ের বাধা অতিক্রম করেছে সে। এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার পর সে এখন বাংলাদেশের মুসা ইব্রাহীম।’
মুসা ইব্রাহীম বলেন, ‘২৩ মে যে অর্জন আমি করেছি তা বাংলাদেশের সবার। হিমালয় থেকে নামার পর যখন আমাকে সবাই অভিনন্দন জানাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের সব মানুষকেই অভিনন্দন জানানো হচ্ছে।’
এরপর মুসা বিপদসংকুল পথ পাড়ি দিয়ে তাঁর হিমালয়ে আরোহণ ও অবতরণের রোমহর্ষক গল্প শোনান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলট, নর্থ আলপাইন ক্লাবের সভাপতি আনিসুল হক, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ড. মোহিত কামাল প্রমুখ।