ডিজিটাল প্রকাশনা জগতে প্রযুক্তি বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসছে। বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক বুক রিডার এসব প্রমাণ বহন করে। আধুনিক জীবনযাত্রায় এই ডিজিটাল প্রকাশনাগুলো ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলতে সক্ষম হচ্ছে।

ইলেকট্রনিক রিডারকে সংক্ষেপে ই-রিডার বলা হয়। যেসব ইলেকট্রনিক ডিভাইসে ভার্চুয়াল বই পড়া যায় তা হচ্ছে ই-রিডার। সামনের দিনগুলোতে এই ই-রিডার ব্যাপকভাবে পঠিত হবে। মুদ্রণ বা প্রকাশনা জগতে ই-রিডার সামগ্রিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে। এর কারণ হিসেবে বলা যায়, এই ই-রিডারগুলো সহজে বহনযোগ্য, হালকা এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য। নতুন বছরের শুরুতে প্রযুক্তি বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের ই-রিডার লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

আমাজন কিনলে টু ই-রিডার
আমাজানের কিনডলে টু একটি ডিজিটাল বুক রিডার হিসেবে কাজ করে। এতে ৬ ইঞ্চি স্ক্রিন প্রদর্শন করে। ১৬ লেভেল গ্রে স্কেল সাপোর্ট করে। এতে রয়েছে ২ গিগাবাইট ইন্টারনাল স্টোরেজ ক্ষমতা। এটি ইউএসবি ক্যাবলের মাধ্যমে কম্পিউটারের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে। এতে রয়েছে ওয়ারলেস কানেক্টিভিটি কোনো কেবল ছাড়াই অনলাইনে বই পড়া যাবে অনায়াসে।

বার্নেস অ্যান্ড নোবেল নুক
নুক একটি ইলেকট্রনিক বুক রিডার। এটি কিনডলে টু ই-রিডারের অনুরুপ। উভয় মডেল একই প্রকৃতির এবং প্রায় একই মূল্যের। এতে গ্রে স্কেল ই ইনক স্ক্রিন এবং ব্যাক ও ফরওয়ার্ড বাটনসহ কালো রঙের রর্ডার রয়েছে। এতে ওয়াইফাই (৮০২.১১বি/জি) কানেক্টিভিটির মাধ্যমে সরাসরি ইন্টারনেট থেকে বই পড়া যাবে। নুকে অনবোর্ড ২ গিগাবাইট স্টোরেজ ছাড়াও মাইক্রো এসডি স্লটে ১৬ গিগাবাইট পর্যন্ত স্টোরেজ বাড়ানো যাবে। নুক এর একটি উল্লেখযোগ্য ডিজাইনে রয়েছে টাচ স্ক্রিন সুবিধা, এটি ৬.৫ ইঞ্চির নীচে ইলেকট্রনিক পেপার প্রদর্শন করবে। এতে পিডিএফ ভিউয়ার কাজ করে এবং মিউজিক প্লেয়ার রয়েছে। নতুন অধিকাংশ নুক ই-রিডারে এটিএন্ডটি নির্ভর থ্রিজি ফ্রি সার্ভিস প্রদান করছে। আশা করা যাচ্ছে বার্নেস এন্ড নোবেল নুক মার্কেটে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হবে।

সনি রিডার টাচ এডিশন
সনির একটি নতুন ই-বুক রিডার। এতে রয়েছে টাচস্ক্রিন সুবিধা। এতে ৬ ইঞ্চি ৮-গ্রে স্কেল ই ইনক্ স্ক্রিন রয়েছে। এর ফ্রেম মেটালিক কেস দ্বারা (সিলভার, কালো এবং লাল রঙের) আবদ্ধ। এতে ড্রয়িং সহ নোট লেখা সুবিধা থাকছে। এটি আকারে ছোট এবং হালকা। এটি ইউএসবি ক্যাবলের দ্বারা কম্পিউটারের সহিত সংযুক্ত হয়। ই-বুক লাইব্রেরি সফট্ওয়্যার ইনস্টল করার পর প্রয়োজনীয় কনটেম্লট বা বই সনি ই-বুক রিডারে ক্যাবল দ্বারা ট্রান্সফার করা যায়। এতে অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যেমন অডিও প্লেয়ার দ্বারা এম্পিথ্রী অথবা এম্পিফোর মিউজিক শোনা যাবে, বিভিন্ন ধরনের ছবি .jpg, .png, .gif অথবা .bmp ফরমেটে প্রদর্শন করা যাবে।

ফুজিত্সু ফ্লিপিয়া ই-রিডার
ফুজিত্সু ফ্লিপিয়া একটি ফ্লেক্সিবল ই পেপার রিডার। এটি কিনডলে বা নুক এর সহিত তুলনা করা যায়। এতে রয়েছে ইউএসবি ২.০ পোর্ট, এসডি কার্ড স্লট এবং ইন্টারনেট এক্সেসের জন্য ব্লুটথ বা ওয়াইফাই প্রযুক্তি। ৪ গিগাবাইট পর্যন্ত মেমরি বাড়ানো যাবে। এতে কালার এলসিডি টেকনোলজি ব্যবহৃত হয়েছে যাতে ২৬০,০০০ (৩ স্ক্যান) অথবা ৪০৯৬ (২ স্ক্যান) অথবা ৬৪ (১ স্ক্যান) পর্যন্ত কালার প্রদর্শন করা যাবে। ফ্লিপিয়া ই-রিডারে ৮ ইঞ্চি স্ক্রিনে টাচ স্ক্রিন সুবিধা থাকছে।

ইনটুরেজ ইডজেঃ টেক্সটবুক ইভার
এবার ইনটুরেজ সিস্টেম ইন কর্পোরেশন বাজারে আনছে ইনটুরেজ ইডজে। এতে রয়েছে ডুয়াল স্ক্রিন যার লক্ষ্য এডুকেশন মার্কেটে প্রভাব বিস্তার করা। এদের গপএত্ধ-িঐরষষ এর মতো প্রকাশনা কোম্পানীসমূহের সহিত চুক্তি রয়েছে। এতে একটি স্ক্রিন ৯.৭ ইঞ্চি এবং অন্য স্ক্রিনে ১০.১ ইঞ্চি এলসিডি। এলসিডি সাইটে ইনড্রয়েড সফট্ওয়্যারসমূহ নির্বাহ হবে। এতে রয়েছে টাচ স্ক্রিন ওভারলে। এটি একইসঙ্গে নেটবুক, নোটপ্যাড, ই-রিডার, ভিডিও প্লেয়ার এবং অডিও রেকর্ডার হিসেবে কাজ করবে। অর্থাত্ এতে ব্যবহারকারীর ডিজিটাল চাহিদা পূর্ণ হবে। ভার্চুয়ালি এতে যেকোনো স্থান হতে ওয়েব ব্রাউজ করা যাবে এবং কাজ করা যাবে। এটি এ মাসে বাজারে আসছে।

প্রযুক্তি মানুষের জীবন যাত্রায় অভাবনীয় পরিবর্তন এনে দিয়েছে। আগামী দিনে আসবে আরো পরিবর্তন। ইলেকট্রনিক বুক রিডারসমূহ মানুষের প্রতিদিনের জীবন যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা এই ই-রিডারসমূহ সহজে যে কোনো অবস্থানে বহনযোগ্য। ভ্রমণে কিংবা অবসরে এমনকি সমুদ্রে ভ্রমণে এসে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যভাবে পছন্দমত বই পড়তে পারবে। সময় কেটে যাবে উপভোগ্য মুহূর্তের অবসরে।