স্বপনে তার সাথে হয় দেখা/
বসে বসে ভাবি তা একা একা
সে স্বপ্নে আসে তবু
স্বপ্নের চেয়েও মধুর
তাকে পাবার আশায়…দুচোখে রাখা দূর বহুদূর!—

মোনালিসার স্বপ্নপুরুষ কে? স্বপ্নের পুরুষের দেখা কি বাস্তবে পেয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরটা মোনালিসা দিলেন গানে গানে। তিনি ‘হেঁয়ালি’ করার সুযোগ পেলেও এ প্রতিবেদক নাছোড়বান্দা। সরাসরিই প্রশ্ন ছুড়লাম, এই গানের গায়কের (হাবিব) সঙ্গেই নাকি…! প্রশ্ন তখনো শেষ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। মোনালিসাই উত্তর নিয়ে প্রস্তুত, ‘জি! এই গায়কের সঙ্গেই আমার প্রেম! খুব শিগগিরই বিয়ে! আমিও জেনেছি, শুনেছি। পত্রিকার মাধ্যমে। চার বছর ধরেই শুনছি। খবরটি নতুন নয়।’ তাহলে যে ফেসবুকে হাবিব ওয়াহিদ তাঁর সম্পর্কের ‘স্ট্যাটাস’ দিয়েছেন—এনগেজড উইথ মোজেজা আশরাফ মোনালিসা? ওটা?
‘ওটাও সত্য। হাবিবের সঙ্গে মোনালিসার বাগদান হয়েছে, সামনে বিয়ে। কিন্তু ফেসবুকে। হা হা হা! ভাই রে, আমি নিজেও ফেসবুকে নেই। আর আপনি যাঁর কথা বলছেন, যত দূর শুনেছি, তাঁর অ্যাকাউন্টটাও ভুয়া।’ তাহলে কি মোনালিসার জীবনে সত্যিই কোনো স্বপ্নপুরুষ নেই? প্রশ্ন শুনে সেই বিখ্যাত হাসি ছড়ালেন। সঙ্গে ছোট্ট উত্তর, ‘ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আমি কখনোই কথা বলতে পছন্দ করি না।’ কিন্তু মোনালিসা-ভক্তরা তো জানতে চান, তাঁদের প্রিয় তারকা কবে বিয়ে করছেন! অন্তত মোনালিসার সমসাময়িক কিংবা তাঁর পরে আসা তারকারা তো সংসারী হচ্ছেন কিংবা হতে যাচ্ছেন, মোনালিসা কবে বসবেন বিয়ের পিঁড়িতে?
‘আমি জানি না। আপাতত কাজ ছাড়া কিছু ভাবতে চাইছি না।’
কাজ? গত এক বছর তো বিদেশ বিভুঁইয়েই অবসর কাটিয়েছেন মোনালিসা। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও কাজের মধ্যে ডুবে যেতে সমস্যা হয়নি? জনপ্রিয়তার পালে একটু হলেও কি বৈরী হাওয়া লাগেনি? এবার মোনালিসা বেশ সিরিয়াস, ‘দেখুন, আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি, যোগ্যতা, আন্তরিকতা, সততা থাকলে যে কেউ যেকোনো কাজে সাফল্য পাবে। ফিরে এসেই আহমেদ ইউসুফ সাবেরের নির্দেশনায় বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেছি। চিত্রনায়িকা দিতি প্রথমবারের মতো যে নাটকটি পরিচালনা করেছেন, সে নাটকে তিনি আমাকেই নিয়েছেন। কৌশিক শংকর দাস, মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ, নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামুল, আশরাফী মিঠু, প্রমুখ নির্মাতা আমাকে নাটকে নিচ্ছেন। কেন? নিশ্চয়ই যোগ্যতা প্রদর্শন করতে পেরেছি, তাই।’
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে শুধু মডেলিংকেই প্রধান পেশা হিসেবে নিয়ে কাজ করেছেন মোনালিসা। সমসাময়িক অন্যরা নাটকে ব্যস্ত হলেও মোনালিসার কাছে সব সময়ই প্রাধান্য পেয়েছে মডেলিং। কেন? ‘সত্য বলব?’ অনুমতি নিয়ে মোনালিসার সরল স্বীকারোক্তি, ‘অভিনয়টা আমি কখনোই হূদয় দিয়ে অনুভব করতে পারতাম না। কিন্তু আমার অভিনীত কয়েকটি নাটক জনপ্রিয় হওয়ার পর নিজের অজান্তেই কেন যেন অভিনয়কে ভালোবেসে ফেললাম। এখন কিন্তু আমি নিয়মিতই নাটক করছি। মডেলিং সেই আগের মতোই, বেছে বেছে বছরে একটি কি দুটি।’
মডেলিংয়ে মৌ-নোবেলকে ‘গুরু’ মানলেও এ সময়ের মডেলদের মধ্যে মোনালিসার পছন্দ শখ ও সারিকাকে। ‘পুরুষ মডেল খুঁজে পাই না। কেন? সেটার উত্তর নির্মাতারাই ভালো বলতে পারবেন।’ আক্ষেপ ঝরে পড়ে মোনালিসার কণ্ঠে। পাশ কাটিয়ে ফিরে যাই আবার, সেই স্বপ্নের দেশে। মোনালিসা চোখ বুজে কোন স্বপ্নটি দেখেন? ‘আমি ভাই সুখী মানুষ। ঘুমের সময় শুধুই ঘুম। স্বপ্ন দেখে ঘুমের সময়টা বরবাদ করতে চাই না। হা হা হা।’ আর চোখ খুলে? এবার মোনালিসার দুই চোখে স্বাপ্নিক অনুভূতি স্পষ্ট, ‘দেশ নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখি। রাস্তায় বের হলেই স্বপ্ন দেখি, একদিন যানজটমুক্ত বাংলাদেশের রাস্তা দিয়ে চলব। পত্রিকা খুললেই স্বপ্ন দেখি, আমরা সবাই সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ব। সর্বস্তরের সবাই সুশিক্ষিত হবে। আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে নিঃশ্বাস নেব।’ স্বপ্নের তালিকা অনেক দীর্ঘ। দম নিয়ে নিলেন মোনালিসা। পরক্ষণেই কণ্ঠে হতাশার সুর, ‘আমার এই স্বপ্ন কখনো পূরণ হবে তো?’