হাওর অধ্যুষিত নিকলী উপজেলা সদরের শহীদ স্মরণিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে বালিকাদের কারাতে প্রশিক্ষণ। বিদ্যালয়ের একটি ভবনের ছাদের ওপর সকালে শুরু হয় হাওর বালিকাদের এই কারাতে প্রশিক্ষণ। এই প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের (নউক) গার্ল পাওয়ার প্রজেক্ট। স্থানীয় হাইস্কুল, কলেজ এমনকি প্রাইমারি স্কুলের ছাত্রীরাও এই কারাতে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করছে। প্রশিক্ষণ চলবে মোট ৩০দিন। প্রতিদিন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে শতাধিক ছাত্রী উপস্থিত হয়। তবে তাদের মধ্যে প্রথম ব্যাচে ৩০ জনকে চূড়ান্ত প্রশিক্ষণের জন্য বাছাই করা হবে বলে গার্ল পাওয়ার প্রজেক্ট সূত্রে জানা যায়। গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে শতাধিক ছাত্রী কারাতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।

নিকলী মুক্তিযোদ্ধা আদর্শ কলেজের ছাত্রী প্রিয়াংকা রায়, হাসি, চাঁদনী প্রহর শান্তা, শহীদ স্মরণিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুরমা, নূরুন্নাহার, নিকলী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ভাবনা প্রমুখ জানায়, এতোদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তারা শুধু পিটি-প্যারেড (শরীরচর্চা) শিখেছে। কিন্তু ব্যতিক্রমী এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে পেরে তারা মহাখুশি। এই প্রশিক্ষণ তাদের মনোবল বাড়িয়ে দেবে। তারা জানায়, রাস্তাঘাটে বখাটেদের উত্পাত ও অন্যান্য বিপদ থেকে আত্মরক্ষার জন্য এটি একটি উত্তম কৌশল। বিশেষ করে বখাটেদের শায়েস্তা করতে সুযোগ পেলেই রপ্ত করা এই প্রশিক্ষণ কাজে লাগাবে বলে তারা সকলেই দৃঢ়তার সঙ্গে জানায়।

কারাতে প্রশিক্ষক আশরাফুল আলম জানান, হাওর বালিকাদের মার্শাল আর্টের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ দেখে তিনি অভিভূত। প্রত্যেকেই অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে প্রশিক্ষণে অংশ নেয়। প্রতিটি মেয়েরই এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা উচিত। তাহলে রাস্তাঘাটে একা একা চলাফেরা করতে নিজেকে আর অসহায় মনে হবে না। গার্ল পাওয়ার প্রজেক্টের নিকলী উপজেলার দায়িত্বে নিয়োজিত টেকনিক্যাল অফিসার এফ.এম সাইদুর জানান, আত্মরক্ষার জন্য বিভিন্ন শারীরিক কৌশলগত দিক আয়ত্ত্ব করার পাশাপাশি মেয়েদের মানসিক শক্তি সুদৃঢ় করাই কারাতে প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য। তিনি জানান, হাওর বালিকাদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করায় পরবর্তীতে আরো ব্যাচের মাধ্যমে তাদেরকে মার্শাল আর্টে প্রশিক্ষিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।