কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলায় প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে বিলকিস বেগম (৩৮) নামের এক গৃহবধূর আট মাসের গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। মত্স্য খামার নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত বুধবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। গৃহবধূ বিলকিসের পরিবার অভিযোগ করেছে, প্রতিপক্ষের হামলার আশঙ্কায় থানায় তিনটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

এলাকাবাসী জানায়, কটিয়াদী উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের ভুনা গ্রামের ২০ একর জমির ওপর বিলকিসের স্বামী কাজল মিয়ার একটি মত্স্য খামার রয়েছে। একই এলাকার হানিফ খান ও কাঞ্চন মিয়া প্রভাব খাটিয়ে ওই খামার থেকে প্রায়ই মাছ ধরে নিতেন। এ ব্যাপারে খামারের নৈশপ্রহরী আলম মিয়া কটিয়াদী থানায় তিনটি জিডি করেছেন। এতে হামলার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেছিলেন।

গৃহবধূর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হানিফ খান ও কাঞ্চন মিয়ার বিরুদ্ধে জিডি করায় তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে কাজল মিয়া ও আলম মিয়াকে একাধিকবার হত্যার হুমকি দেন। তাঁরা বুধবার গভীর রাতে ১৫-১৬ জন সন্ত্রাসী নিয়ে কাজল মিয়ার বাড়িতে হামলা চালান। তাঁরা দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢোকামাত্র কাজল মিয়া পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান। পরে দুর্বৃত্তরা তাঁর আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিলকিস বেগমের পেটে কিরিচ দিয়ে আঘাত করে। বিলকিস সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সন্ত্রাসীরা চলে যাওয়ার পর তাঁকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গতকাল শুক্রবার তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন।
হাসপাতালের চিকিত্সক জামাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গর্ভের সন্তানটির মৃত্যু হয়েছে। টানা তিন ঘণ্টা জটিল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বিলকিসকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

কাজল মিয়া বলেন, সন্ত্রাসীদের হামলার আশঙ্কায় তিনটি জিডি করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর আহম্মদ জানান, এ ঘটনায় কাজল মিয়া বাদী হয়ে হানিফ খান ও কাঞ্চন মিয়াসহ ১৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে হানিফ খানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।