রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান তাঁর শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও ভৈরব জেলা বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেন এলাকাবাসীকে। তিনি বলেন, ‘ভৈরবকে জেলা করার ব্যাপারে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছি। প্রধানমন্ত্রীও এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন।’ গতকাল রবিবার সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।ভৈরব পৌর শহরের হাজি আসমত কলেজ মাঠে আয়োজিত ওই সুধী সমাবেশে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘গত বছর সরকার ভৈরবকে দেশের ৬৫তম জেলা ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর পর কিছু লোক হৈচৈ শুরু করে বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু আপনারা জেনে রাখুন, ‘আমি শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও ভৈরবকে জেলা করব, ইনশাআল্লাহ্।’

জিল্লুর রহমান ২০০৯ সালে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো তাঁর নির্বাচনী এলাকা ভৈরব-কুলিয়ারচর সফর করেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘ভৈরব-কুলিয়ারচর এলাকায় ইতিমধ্যে ১২ মেগাওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। আপনারা এলাকার শিল্পের উন্নয়নে ৫০ থেকে ১০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের যে দাবি জানিয়েছেন, আমি তার সঙ্গেও একমত পোষণ করছি।’ এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সন্তান উল্লেখ করে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, এ অঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে একটি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেঙ্ স্থাপন করা হবে।’

সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি পানি সম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, ‘মন্ত্রী পরিষদে ইতিমধ্যে ভৈরব জেলার বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় দ্রুত গতিতে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। আপনারা ধৈর্য ধরুন শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভৈরব এসে জেলার কার্যক্রম উদ্বোধন করে যাবেন।’নির্মিতব্য জিল্লুর রহমান ভৈরব শহররক্ষা বাঁধ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মো. সায়দুল্লাহ মিয়ার সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশ একপর্যায়ে ভৈরব জেলা দাবি সমাবেশে পরিণত হয়। স্থানীয় বক্তারা ভৈরব জেলা বাস্তবায়নের দাবিতেই বক্তব্য দেন। একপর্যায়ে মঞ্চের সামনে উপস্থিত ভৈরব-কুলিয়ারচরবাসী জেলা বাস্তবায়নের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুরের উপস্থাপনায় সুধী সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এ বি তাজুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন, কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আবুল হোসেন লিটন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান স্থানীয় এমপি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া তিনি এক কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ভৈরবের ২৯ নম্বর রেলসেতুর প্রশস্তকরণ প্রকল্প, চার কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের শহীদ আইভি রহমান ছাত্রীনিবাস ও সম্প্রসারিত একাডেমিক ভবন এবং ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য ‘জিল্লুর রহমান ভৈরব শহররক্ষা বাঁধ’ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এদিকে রাষ্ট্রপতির এই প্রতিজ্ঞায় কিশোরগঞ্জের যুব সমাজে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় যা কিশোরগঞ্জের ফেইসবুক গ্রুপ গুলোতে  আবি্রাম মন্তব্য পরলেই  যায় ।