রাজধানীর উত্তরা আবাসিক এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার ঈদের বখশিশ চাইতে গিয়ে বাড়িওয়ালার গুলিতে আহত হয়েছেন হিজড়া সম্প্রদায়ের এক সদস্য। তাঁর নাম রিনা। তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর হিজড়া সম্প্রদায়ের শতাধিক সদস্য বাড়িটি ঘিরে বিক্ষোভ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়িওয়ালা ডা. আজগর আলীর আগ্নেয়াস্ত্রটি জব্দ করে ওই পরিবারের সব সদস্যকে নিরাপদে সরিয়ে দেয়।

উত্তরা থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান সাংবাদিকদের জানান, চার-পাঁচজন হিজড়া বিকেল ৪টার দিকে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের ১৫ নম্বর রোডের ২৩ নম্বর বাড়িতে গিয়ে মালিক ডা. আজগর আলীর কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা চান। বাড়িটির নির্মাণকাজ চলছিল। আজগর আলী চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে হিজড়ারা কিছুক্ষণ চিৎকার ও হৈচৈ করে চলে যান। বিকেল ৫টার দিকে তাঁরা আরো ২০-৩০ জন হিজড়াকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে ডা. আজগর আলীর এক শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আলী আজগর তাঁদের ভয় দেখানোর জন্য তাঁর লাইসেন্স করা রিভলবার দিয়ে মেঝেতে গুলি করেন। গুলিটি মেঝেতে লেগে সেখান থেকে ছিটকে গিয়ে রিনার পায়ে লাগে।

এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হিজড়াদের কয়েকজন পুলিশের এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে জানান, মানুষের কাছে হাত পেতেই তাঁদের দিন চলে। আর তাই কোনো চাঁদা নয়, ঈদের জন্য তাঁরা বখশিশ চাইতে গিয়েছিলেন। তাঁরা কোনো টাকার অঙ্কও বেঁধে দেননি, কিন্তু এতে করে গৃহকর্ত্রী প্রথমে তাঁদের গালাগাল করে চলে যেতে বলেন এবং তাঁরা যেতে না চাইলে তাঁদের বোমা মেরে হত্যা করবে বলে হুমকি দেন। এ সময় তাঁরা ভয় পেয়ে চলে যান। পরে আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আবার ওই বাসায় যান। এতে গৃহকর্তা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং একপর্যায়ে রিভলবার দিয়ে তাঁদের একজনের পায়ে সরাসরি গুলি করেন। গুলিবিদ্ধ রিনা তুরাগের কামারপাড়া এলাকায় বসবাস করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যে রিভলবার থেকে গুলি করা হয়েছে সেটি জব্দ করা হয়েছে। হিজড়ারা চাঁদা দাবি করতে গিয়েছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।