কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য বিক্রি হচ্ছে। মাদকদ্রব্যের মধ্যে হেরোইন, ফেনসিডিল, ড্যান্ডিরাইট ও চোলাই মদের চাহিদা এবং ব্যবহার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি এলাকায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনাও বেড়ে গেছে বলে জানা গেছে।সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ জেলা সদর ও ভৈরব থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে গাঁজা, হেরোইন, ফেনসিডিল ও স্পিরিট নিকলীতে আনা হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাদকাসক্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই চুরির ঘটনা ঘটছে। প্রতি রাতেই বাড়িঘর ও দোকানপাটে চুরি হচ্ছে। রাস্তাঘাটে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। নেশার টাকা জোগাড় করতে মাদকসেবীরা চুরি ও ছিনতাই করছে বলে সাধারণ মানুষ ও পুলিশের ধারণা।অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিকলী সদর ইউনিয়নের কুলুহাটি, টিঅ্যান্ডটি মোড়, চার রাস্তার মোড়, মহরকোনা বাজার, নতুন বাজার, বেড়িবাঁধ, পূর্বগ্রাম, জারইতলা, মুচিবাড়ি, সাজনপুর, রসুলপুর, বাচ্চু মিয়ার বাড়ি, চান মিয়ার বাড়ি, গুরই নতুন বাজার, বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র, ছাতিরচর বাজার, প্রতিরক্ষা দেয়ালের পাশে, সিংপুর বাজার, সিংপুর জালহাটি, বাটি বরাট্টা, সিংপুর বেড়িবাঁধ, গোড়াদিঘা, কারপাশা মুচিবাড়ি, জালালপুর মুচিবাড়ি, শান্তিপুর, জয়বাংলা বাজার, দামপাড়া বাজার ও দামপাড়া স্কুল মাঠে প্রকাশ্যে মদ-গাঁজা বিক্রি হচ্ছে।

দামপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মানিক সওদাগর বলেন, সন্ধ্যার পর দামপাড়ায় মাদকাসক্তদের উৎপাত শুরু হয়। এতে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ব্যাপারে তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। জারুইতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, নেশাগ্রস্তদের দাপটে এলাকার লোকজন আতঙ্কে থাকে।

কারপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল হাসেম জানান, কারপাশা ও জালালপুরের ছয়-সাতটি পরিবার চোলাই মদ তৈরি করে থাকে।
নিকলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসহাক ভূঞা বলেন, মাদক থেকে রক্ষা পেতে সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতা প্রয়োজন। নিকলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম বলেন, চুরি-ছিনতাই ও মাদকাসক্তদের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে—এ কথা ঢালাওভাবে বলা ঠিক হবে না। তিনি জানান, গত জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২৫ জন মদ বিক্রেতাকে।

নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফজলুর রহমান জানান, অক্টোবরে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় মাদকের বিরুদ্ধে আলোচনার পর ওই মাসেই চোলাই মদের কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৩০ মণ মদ বিনষ্ট করা হয়েছে। ভেঙে দেওয়া হয়েছে ১৮টি মদের মটকা। মাদক, ইভ টিজিং ও জুয়ার বিরুদ্ধে অচিরেই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে তিনি জানান।

প্রথম আলো